শিখা চিরন্তন সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর (অপসংস্কৃতি)

জিজ্ঞাসা : শিখা চিরন্তন কি ? শিখা চিরন্তনকে সম্মুখ করে সম্মান প্রদর্শনকারী অগ্নিপূজকদের অন্তর্ভুক্ত হবে কি ?

শিখা চিরান্তনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে লংমার্চ বা জিহাদের ডাক দেয়া কতটুকু শরীয়ত সম্মত ? জিহাদ কোন অবস্থায় কখন ফরয হয় । বর্তমান বাংলাদেশে সেই অবস্থায় নিপতিত হয়েছে কি ?

জবাব : শিখা চিরান্তন অগ্নি পূজকদের একটি প্রতীক । অগ্নি পূজকরা আগুন প্রজ্জ্বলিত করে তার পূজা করে, তার সামনে মাথা নত করে সম্মান প্রদর্শন করে থাকে এবং তা থেকে প্রেরণা লাভ করে থাকে । হুযুর (সাঃ) এর জন্মের পূর্বে পারস্যবাসীরা অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত করে তার পূজা করে আসছিল । সেই অগ্নিশিখা হাজার হাজার বছর ধরে জ্বলছিল । কিন্তু হুযূর (সাঃ) এর জন্মের সময় সেই অগ্নিশিখা আল্লাহর কুদরতে নিভে যায় । আল্লাহ ছাড়া কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে মাথা নত করে সিজদা করা বা বিধর্মী কায়দায় সম্মান প্রদর্শন করা এবং প্রেরনার উৎস মনে করে তাকে স্যালুট দেয়া, তাতে পুস্পস্তবক দিয়ে প্রেরণা লাভ করা শিরক ও কুফরী । কারণ, বিধর্মী বা বিজাতীয় সম্প্রদায়ের প্রতীকী অগ্নিশিখা মুসলমানদের আনন্দ উৎসব বা কোন বিশেষ দিনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা, তাকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য স্যালুট, পুস্পস্তবক ইত্যাদি প্রদান করা অগ্নি পূজারই নামান্তর । কেননা, হাদীসে উল্লেখ হয়েছে

“অর্থাৎ যে ব্যক্তি বিশেষ কাজ বা বিশেষ আচরণের দিক দিয়ে কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্যতা রাখবে সে তাদেরই দলভুক্ত হবে ।”

সুতরাং বিজাতীয় সম্প্রদায়ের যে কোন প্রতীকীকে যে কোনভাবেই হোক, সম্মান প্রদর্শন করা মুসলমানের জন্য হারাম ও নাজায়িয ।

দ্বিতীয়ত : শিখা চিরন্তন নামের মধ্যেই কুফরী বিদ্যমান রয়েছে । কেননা, একমাত্র আল্লাহ তা’আলাই চিরন্তন ও চিরঞ্জীব । আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্তু চিরন্তন বা চিরঞ্জীব হতে পারে না ।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে –
“আল্লাহ মহান সত্তা – তিনি ছাড়া আর কোন মাবূদ নেই । তিনি চিরন্তন ও চিরঞ্জীব ।”

সুতরাং আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে চিরন্তন ও চিরঞ্জীব মনে করা বা এ ধরনের আকীদা ও বিশ্বাস রাখা শিরক ও কুফরী । আর যে কোন কুফরী কাজ মুসলমানের জন্য করা হারাম ও নাজায়িয । এর দ্বারা ঈমান চলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে ।

[প্রমাণ : কিফায়াতুল মুফতী, ১:২২৪ # তাতারখানিয়া, ৫:৪৪৯ # শামী, ৬:৩৮৪ # ফতহুল কাদীর, ৫:২৯৯]

কোন মুসলিম রাষ্ট্রে যদি কেউ শিরক বা কুফরী কাজ অথবা শরীয়ত বিরোধী কোন কাজ প্রকাশ্যে এবং ব্যাপকভাবে চালু করতে চায়, তাহলে ঐ রাষ্ট্রের মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব হয়ে পড়ে যে, তারা ঐক্যবদ্ধভাবে এর প্রতিবাদ জানাবে এবং তা বন্ধ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবে এবং উক্ত ব্যক্তিকে তা বন্ধ করতে বাধ্য করবে । এর জন্য অবস্থার প্রেক্ষিতে হরতাল, লংমার্চ ও অবরোধ ইত্যাদির প্রয়োজন হলে করবে এবং তা জিহাদের অন্তর্ভুক্ত হবে । কারণ, যে যামানায় যেভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তা বন্ধ হবে, ঐ যামানায় ঐ ভাবেই প্রতিবাদ করতে হবে । আর তা এক প্রকার জেহাদ হবে । কারণ, কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়ার নামই শুধু জিহাদ নয়; বরং এর বিভিন্ন রূপ হতে পারে । তাছাড়া এগুলো দ্বীনের দুশমনদের তৈরী হাতিয়ার দ্বারা দুশমনদের মুকাবিলা করা নাজায়িয নয় । অনেক মূর্খ লোক এ তথ্য না বুঝর কারণে আপত্তি করে থাকে ।

[প্রমাণ : সূরা হজ্ব, ৪০ # জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া ১:৬০৫]

Previous
Next Post »